কুবি প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলাকালীন স্বাভাবিক কার্যক্রম ঠিক রাখতে স্বতন্ত্র সংযাগ ব্যবস্থা কিংবা জেনারেটর সুবিধা না থাকায় নানান সমস্যার মুখামুখি হতে হচ্ছে এখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। সঙ্গে প্রশাসনিক কার্যক্রম বিঘ্নিত এবং রাতের বেলায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সমসাময়িককালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) রয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলাকালীন নিজস্ব জেনেরেটরের ব্যবস্থা। এছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলাকালীন বিভাগগুলোতে রয়েছে জেনেরেটর সুবিধা এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সাপ্লাইয়ের জন্য রয়েছে দুইটি সংযোগ লাইন। কিন্তু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই কোনো স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ সংযোগ বা জেনেরেটর ব্যবস্থা। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলের।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বিভিন্ন সময়েই পড়তে হয় নানান সমস্যায়। এর মধ্যে পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় দিনের বেলায় মাত্রাতিরিক্ত গরমের প্রকোপ দেখা যায়। কিন্তু এই সময় প্রায়ই বিদ্যুৎ না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের।
এছাড়া হালকা ঝড়বৃষ্টি হলে বিদ্যুৎ চলে গিয়ে ১০-১২ ঘণ্টা আর বিদ্যুৎ থাকে না। এতে রাতের বেলায় ক্যাম্পাস জুড়ে অন্ধকারের রাজ্য পরিণত হয়। যার সুযোগ গ্রহণ করে বহিরাগত বখাটে সন্ত্রাসী ও মাদকসেবীরা। বিভিন্ন সময়ে এসব বখাটেদের হাতে শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা এবং সর্বশেষ গত ২৩ আগস্ট ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে এক শিক্ষার্থীর মোবাইল ছিনতাই তার সত্যতা বহন কর।
এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এমনকি রাতের বেলায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর জনশূন্য হতে দেখা যাচ্ছে পুরো ক্যাম্পাস। কিন্তু এমন গুরুতর সমস্যা নিরসনে পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনার কথা জানাতে পারেনি প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থী ইমরান মাহমুদ জীবন বলেন, আমরা যারা হলে থাকি, বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের বের হতে হয়। কিন্তু বিশেষত রাতের বেলায় যখন বিদ্যুৎ থাকে না পুরো ক্যাম্পাস তখন নির্জনতায় ঢেকে আসে, এতে বখাটেদের কবলে পড়ার একটা ভয় থাকে। অপরদিকে বিদ্যুৎ না থাকলে তখন পড়াশোনায় চরম ব্যাঘাত ঘটে। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যা সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৈাশলী এস. এম. শহীদুল হাসান জানান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় যে সংযোগ লাইনের আওতাধীন তা একাধারে কুমিল্লা বার্ড, পলিটেকনিক, ক্যাডট কলেজ, টিটিসিসহ কাটবাড়ী অঞ্চলের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটায়। ফলে আমরা স্বতন্ত্র সংযোগ লাইনের সুবিধা পাই না। আবার বিভিন্ন সময়ে ঝড়বৃষ্টির কারণে সংযাগ লাইনে সমস্যা হলে বিদ্যুৎ বিঘ্নিত হয়ে থাকে। এছাড়া দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বিঘ্নিত হয় না।
এ দিকে, রাতের বেলায় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. আবু তাহের জানান, বিদ্যুৎ বিঘ্নিত হওয়ার সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা চিন্তা করে আমরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সামনে এবং শহীদ মিনারে সোলার লাইটের ব্যবস্থা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে চিহ্নিত আরও কিছু জায়গায় এমন লাইট স্থাপনের উদ্যোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা ইউজিসির চেয়ারম্যান বরাবর জানিয়েছি। প্রকল্প আসলে আমরা তা বাস্তবায়ন করব।