আনোয়ার হোসেন:
পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২২ বছর পূর্তি উদযাপন । পাহাড়ের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার এবং জনসংহতি সমিতির মধ্যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী খাগড়াছড়িতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আনুষ্ঠনিকভাবে অস্ত্র সমর্পণ করেন সন্তু লারমাসহ ১হাজার ৯শ ৬৮ জন শান্তিবাহিনীর সদস্য।

ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বাইশ বছর পূর্তি উপলক্ষে খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের ব্যবস্থাপনায় খাগড়াছড়ি পৌরসভার উদ্যোগে ৩দিন ব্যাপী ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
পৌর টাউন হলে পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর সভাপতিত্বে মেলাটি শুভ উদ্বোধন করেন ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন এবং অভ্যন্তরীণ উদ্ধাস্ত নির্দিষ্টকরণ ও পুনর্বাসন সর্ম্পকিত টাস্কর্ফোস’র চেয়াররম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, এমপি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি িিরজিয়ন কমান্ডার ব্রিগডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান, বিজিবি সেক্টর কমান্ডার, পৌর মেয়র মোঃ রফিকুল আলম প্রমুখ।
্এছাড়াও খাগড়াছড়ির সকল উপজেলায় দিবসটিকে যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয়। সোমবার সকালে গুইমারা মডেল হাই স্কুল মাঠ প্রাঙ্গন হতে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে গুইমারা রিজিয়ন মাঠে এসে শেষ হয়। সকাল ৯টায় মাঠে আলোচনা সভা ও শান্তি চুক্তির উপর বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া প্রতিযোগিদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শাহরিয়ার জামান এএফডব্লিউসি পিএসসি,জি। বিশেষ অতিথি ছিলেন, গুইমারা সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল আব্দুল হাই পিএসসি,জি, সিন্দুকছড়ি জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল রুবায়েত মাহমুদ হাসিব পিএসসি,জি, যামিনি পাড়া জোন কমান্ডার মোঃ মিজানুর রহমান পিএসসি,জি, মানিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার গুইমারা তুষার আহমেদ, গুইমারা ইউপি চেয়ারম্যান মেমং মারমা মারমা প্রমূখ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ মিলেমিশে রয়েছে বলেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে। পার্বত্য শান্তিচুক্তির ফলে সকল সম্প্রদায় ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে একত্রিত হতে পেরেছে। সকলের সহযোগিতা থাকলে ভবিষ্যতে পাহাড়ে শান্তি বিরাজমান থাকবে।

প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে চলমান রক্তপাত ও সংঘাত নিরসনে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক উদ্যোগে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি। সরকারের পক্ষে সে সময়ে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং জনসংহতি সমিতির পক্ষে (জেএসএস সভাপতি) জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সারাবিশ্বে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হিসাবে এ চুক্তি তৃতীয় কোনো পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই স্বাক্ষরিত হয়।